ফেরদৌস ফয়সাল
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-এর বরাতে এ হাদিসের বর্ণনা আছে।
(খন্দকের যুদ্ধে) যখন পরিখা খনন করা হচ্ছে, তখন আমি নবী (সা.)-কে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম। স্ত্রীর কাছে ফিরে গিয়ে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার কাছে কি কিছু আছে? রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দারুণ ক্ষুধার্ত দেখতে পেলাম।
সে একটি চামড়ার পাত্র এনে তা থেকে এক সা পরিমাণ যব বের করে দিল।
আমার বাড়িতে একটা বকরির বাচ্চা ছিল। আমি সেটা জবাই করলাম। আর সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল। আমার কাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে সে-ও তার কাজ শেষ করল। গোশত কেটে কেটে ডেকচিতে ভরে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ফিরে চললাম। (লোকের তুলনায় খাবার অনেক কম ছিল বলে) সে (স্ত্রী) বলল, ‘আমাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) আর তাঁর সাহাবিদের কাছে লজ্জিত করবেন না।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গিয়ে চুপে চুপে আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আমাদের একটি বকরির বাচ্চা জবাই করেছি। আর আমাদের ঘরে এক সা যব ছিল, আমার স্ত্রী পিষে দিয়েছে। আপনি আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসুন।’
নবী (সা.) উচ্চস্বরে সবাইকে বললেন, ‘হে পরিখা খননকারীরা! জাবির খাবারের ব্যবস্থা করেছে। এসো, তোমরা সবাই এসো।’
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমি আসার আগে তোমাদের ডেকচি নামাবে না। খামির থেকে রুটিও তৈরি করবে না।’
আমি (বাড়িতে) এলাম, রাসুলুল্লাহ (সা.)–ও সাহাবিদের নিয়ে এলেন। এরপর আমি আমার স্ত্রীর কাছে এলে সে বলল, ‘আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন।’
আমি বললাম, ‘তুমি যা বলেছ, আমি তা-ই করেছি।’
তখন সে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে আটার খামির বের করে দিলে তিনি (রাসুল সা.) তাতে মুখের লালা মিশিয়ে দিলেন এবং বরকতের জন্য দোয়া করলেন। এরপর ডেকচির কাছে এগিয়ে গিয়ে তাতে লালা মিশিয়ে সেটির বরকতের জন্য দোয়া করলেন।
এর পর বললেন, ‘রুটি প্রস্তুতকারিণীকে ডাকো। সে আমার কাছে বসে রুটি প্রস্তুত করুক, আর ডেকচি থেকে পেয়ালা ভরে গোশত বেড়ে দিক। তবে (চুলা থেকে) ডেকচি নামাবে না।’
সংখ্যায় তাঁরা ছিলেন এক হাজার। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, তাঁরা সবারই তৃপ্তির সঙ্গে খেয়ে বাকি খাবার রেখে চলে গেলেন। অথচ আমাদের ডেকচি আগের মতোই টগবগ করছিল আর আমাদের আটার খামির থেকেও আগের মতোই রুটি তৈরি হচ্ছিল।
সহিহ্ বুখারি, হাদিস: ৪১০২