চার্লস, যিনি বর্তমানে ব্রিটেনের রাজা। ব্রিটিশ রাজা হিসেবে তার দাফতরিক নাম তৃতীয় চার্লস। এর আগে যখন তার মা দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের রানি ছিলেন, তখন তিনি ছিলেন প্রিন্স চার্লস।
প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে তার প্রথম বিয়ে হয়। সেই সংসারে তার দুটি সন্তান। প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি। যদিও বর্তমানে দ্বিতীয় সন্তান প্রিন্স হ্যারি রাজ পরিবারের পদবি ত্যাগ করেছেন এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
এবার তাকে নিয়ে প্রকাশ্যে এল নতুন তথ্য। তার মা প্রিন্সেস ডায়ানার নতুন একটি অডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।
ফাঁস হওয়া অডিও টেপ থেকে জানা যায়, দ্বিতীয় সন্তানও ছেলে হওয়ায় ‘অত্যন্ত হতাশ’ হয়েছিলেন ব্রিটেনের তৎকালীন যুবরাজ (বর্তমান রাজা) তৃতীয় চার্লস। স্ত্রী ডায়ানা ও শাশুড়ি রেন স্পেন্সারের কাছে সেই হতাশা গোপন রাখেননি তিনি।
ফাঁস হওয়া ওই অডিও টেপে প্রয়াত যুবরানিকে ডায়ানাকে নিজেই এই কথা বলতে শোনা গেছে।
তার মৃত্যুর পরে আড়াই দশকেরও বেশি পার হয়ে গিয়েছে। এখনও প্রয়াত যুবরানি ও তার পরিবারকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কৌতূহলের শেষ নেই। সদ্য রাজা হয়েছেন চার্লস। ছোট ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্কের ভাঙনের কথাও এখন সর্বজনবিদিত। এই পরিস্থিতিতে হ্যারির জন্মের পরে চার্লসের পুরনো এই মন্তব্য নতুন করে পিতা-পুত্রের সম্পর্কে ছায়া ফেলবে বলেই মত রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠদের।
সম্প্রতি আমেরিকার এক টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে ডায়ানা ও তার বন্ধু জেমস কোল্টহার্স্টের কথোপকথন শোনানো হয়। তার জীবনীকার অ্যান্ড্রু মর্টনের জন্য সাত ঘণ্টার অডিও টেপ তৈরি করেছিলেন ডায়ানা। ১৯৯০-এর দশকে কোল্টহার্স্টের সঙ্গে তার কথাবার্তাও সেই অডিও টেপের অংশ। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল মর্টনের লেখা ‘ডায়ানা: আ ট্রু স্টোরি’ নামের বইটি। তাতে অবশ্য চার্লস সম্পর্কে এই প্রসঙ্গের কোনও উল্লেখ ছিল না।
জানা গেছে, ‘ডায়ানা: দ্য রেস্ট অব হার স্টোরি’ নামে নতুন একটি তথ্যচিত্রে এই অডিও টেপ ব্যবহার করা হবে।
অডিও টেপে শোনা যাচ্ছে ডায়ানা বলছেন, “হ্যারির জন্মের পরে চার্লস এতটাই হতাশ হয়েছিল যে, সে তার মনোভাব চেপে রাখতে পারেনি। হ্যারির নামকরণ অনুষ্ঠানে আমার সৎমাকে চার্লস বলেই ফেলেছিল— আমরা ভেবেই নিয়েছিলাম এবার মেয়ে হবে। ফের ছেলে হওয়ায় খুবই হতাশ হয়েছি। মা তখন চার্লসকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন- সুস্থ-সবল একটি বাচ্চা হয়েছে। তোমার বোঝা উচিত যে, এর থেকে সৌভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না।”
এখানেই না থেমে ডায়ানা তার বন্ধু কোল্টহার্স্টকে আরও বলেন, “এর পরেই আমার (সৎ)মায়ের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয় চার্লস। কেউ ওর মুখের উপর কথা বললে চার্লস এমনটিই করতো।”
এই কথোপকথনে সৎমা রেন স্পেন্সারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও খোলাখুলি বলেছেন ডায়ানা। বলেছেন, “শুধু আমি নই, আমরা সব ভাইবোনই সৎমাকে ভীষণ অপছন্দ করতাম। ছোটদের একটা প্রচলিত ছড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা সবাই মিলে চিৎকার করে বলতাম— রেন রেন গো অ্যাওয়ে। সৎমায়ের সামনেই তাকে ‘অ্যাসিড রেন’ নামে ডাকতাম। একবার আমি রেগে গিয়ে (সৎ)মাকে বলি—আমি তোমাকে ঘৃণা করি। তোমার কোনও ধারণাই নেই যে আমরা সবাই তোমাকে কতটা ঘৃণা করি। তুমি আমাদের পরিবার ভেঙে দিয়েছ, বাবার সব অর্থ উড়িয়ে দিয়েছ।”
উত্তরে (সৎ)মা আমাকে বলেছিলেন, “তুমি জানো না, তোমার মা তোমার বাবাকে কতটা দুঃখ দিয়েছেন।”
সেই কথা শুনে আমি উল্টো (সৎ)মাকে বলি, “দুঃখ? এই শব্দটার কী মানে, সে সম্বন্ধে তোমার কোনও ধারণাই নেই। আমি দেখেছি আসল দুঃখ-কষ্ট কাকে বলে।”
সেবার আমি (সৎ)মায়ের সঙ্গে সত্যিই দুর্ব্যবহার করেছিলাম, অকপটে তার বন্ধুকে বলেছিলেন ডায়ানা। সূত্র: সিএনএন
Home » UK NEWS » Bangladesh politics » Politics » British Politics » ডায়ানার নতুন টেপ ফাঁস, প্রিন্স হ্যারির জন্মের পর কেন হতাশ হয়েছিলেন ব্রিটিশ রাজা