মামলা বাতিলের সুযোগ নেই, ক্ষতিপূরণের প্রশ্নই আসে না: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলা বাতিলে সুযোগ নেই এবং এ–সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে সাইবার নিরাপত্তা বিল পাস হয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রকাশের পর থেকেই মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বলে আসছে, সাইবার নিরাপত্তা আইনেও কার্যত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মূল বিষয়বস্তু বহাল রাখা হচ্ছে। ফলে মানুষকে হয়রানি করার সুযোগ থেকেই যাবে।
সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান তাঁর প্রশ্নে জানতে চান, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে যারা এই আইনের অপপ্রয়োগের কারণে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি, জেল–জুলুমের শিকার হয়েছেন, এখনো অনেকে কারাগারে আছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না। একই সঙ্গে বিষয়গুলো কীভাবে নিষ্পত্তি করা হবে, তা–ও আইনমন্ত্রীর কাছে জানতে চান তিনি।
জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আইনের অবস্থান হলো, যেসব অপরাধ পুরোনো আইনে করা হয়েছে, সেই পুরোনো আইনে যে শাস্তি, সেই শাস্তি অপরাধীকে আদালত প্রদান করবে। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে—‘অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাঁহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনে রহিতকরণ ও হেফাজত সংক্রান্ত বিধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীন দায়েরকৃত অভিযোগ ও তদ্সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম বা সূচিত কোনো কার্যধারা বা দায়েরকৃত কোনো মামলা বা আপিল যেকোনো পর্যায়ে অনিষ্পন্ন থাকলে উক্ত কার্যধারা বা আপিল এমনভাবে চলমান থাকবে, যেন তা সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীন সূচিত বা দায়েরকৃত। ফলে ডিজিটাল নিরপত্তা আইনের অধীনে দায়ের করা মামলা বাতিল করার সুযোগ নেই এবং এ–সংক্রান্তে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাস হয় এবং ওই বছর ৮ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত জুন মাসে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছিলেন, সারা দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে সরকারের মন্ত্রীরাও স্বীকার করেছেন।