DON'T MISS
Home » UK NEWS » Bangladesh politics » জুমার দিনের যে আদবের কথা বারবার বলেছেন নবীজি (স.)

জুমার দিনের যে আদবের কথা বারবার বলেছেন নবীজি (স.)

8655_IMG_1574.jpeg

জুমাবার মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮) জুমাবারে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। যেমন- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া, উত্তম জামা-কাপড় পরা, আগেভাগে মসজিদে যাওয়া, খুতবা শোনা ইত্যাদি। আর কিছু আদবের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যেমন- মুসল্লিদের টপকে সামনে না আগানো, অনর্থক কথা না বলা ইত্যাদি। এসবের প্রতিদান নিয়েও অনেক হাদিস রয়েছে। 

এসবের মধ্যে যে বিষয়টি ঘুরেফিরে সামনে এসেছে সেটি হলো- মসজিদে গিয়ে কথাবার্তা না বলা, বরং মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা। এই আমলটির প্রতি লক্ষ্য রেখে নামাজ পড়াসহ অন্যসব আমল করলে জুমাবারের সব ফজিলত লাভ হয়। আবার এই আমলের প্রতি গাফিলতির কারণে জুমাবারের সব আমলই নষ্ট হয়ে যায়।

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘জুমার সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির হয়। এক ধরনের লোক আছে যারা মসজিদে প্রবেশের পর তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই পাবে না। দ্বিতীয় আরেক ধরনের লোক আছে যারা জুমায় হাজির হয় সেখানে দোয়া মোনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না। 

তৃতীয় প্রকার লোক হল যারা জুমায় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, কারও ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট দেয় না, তার দুই জুমার মধ্যবর্তী ৭ দিনসহ আরো তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ তাআলা মাফ করে দেন।’ (আবু দাউদ: ১১১৩)

ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত হাদিসে প্রিয়নবী (স.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে ইমামের খুতবার সময় কথা বলে, সে যেনো পুস্তক বহনকারী গাধার মতো! অন্যত্র তিনি শুনেছেন- তার কোনো জুমা নেই (অর্থাৎ তার জুমা বরবাদ হলো) (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ২/১৮৪, হাদিস: ৩১২৩, ৩১২৫)

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে তার এই আমল আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব ছোট পাপ মোচন হবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৩)

আরেক হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল (ফরজ বা সাধারণ গোসল), তাড়াতাড়ি মসজিদে গেল বা যাওয়ার চেষ্টা করল, যাওয়ার পথে কোনো কিছুতে আরোহণ না করে হেঁটে গেল, ইমামের কাছে ঘেঁষে বসল, কোনোপ্রকার অহেতুক কথাবার্তা না বলে মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনল এবং নামাজ আদায় করল, তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে এক বছর রোজা ও নামাজের সওয়াব দেওয়া হবে।’(তিরমিজি: ৪৫৬)

মনে রাখা উচিত, মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনটি বিশেষ আমল করার ও ফজিলত অর্জনের দিন। তাই মুসল্লিদের জন্য মনোযোগ ও গুরুত্বের সঙ্গে জুমার আদবগুলো রক্ষা করা উচিত। বিশেষ করে চুপচাপ থেকে মনোযোগসহ খুতবা শোনার বিষয়টির প্রতি বিশেষভাবে সচেতন থাকা উচিত। এমনকি পাশে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ করো’ বলতেও নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে। 

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, জুমার দিন খুতবা চলা অবস্থায় যদি তোমার পাশের সাথীকে বলো- চুপ করো, তাহলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করলে। (সহিহ বুখারি: ৯৩৪, সহিহ মুসলিম: ৯৩১)

সুতরাং মুসলমানের উচিত, জুমার দিনে পরিপাটি হয়ে নামাজ পড়তে গিয়ে যথাযথ আদব রক্ষা করে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিশ্চুপ থাকা, ইমামের খুতবা শোনা এবং জুমার নামাজ পড়া। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*