ধর্ম আর ‘অতি-দেশপ্রেম’কে পুঁজি করে বলিউডে কিছু সিনেমা চুটিয়ে ব্যবসা করে নিচ্ছে। বছর দুয়েক ধরেই এই ধাঁচের ছবির নির্মাণ ও মুক্তি বেড়েছে। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, ’৭২ হুরে’ কিংবা সাম্প্রতিক ‘গাদার ২’; প্রতিটি সিনেমার বিরুদ্ধেই ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। অথচ এসব সিনেমা বক্স অফিসে রীতিমতো তুলকালাম ঘটিয়ে দিয়েছে।
গত ১১ আগস্ট মুক্তি পাওয়া ‘গাদার ২’ ভারতজুড়ে অবিস্মরণীয় সাফল্য পেয়েছে। সানি দেওল অভিনীত সিনেমাটি শুধু ভারত থেকেই ৫০০ কোটি রুপির বেশি কালেকশন করেছে। কিন্তু এরকম সিনেমার সাফল্য মোটেও শুভ নয় বলে মনে করেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। তার মতে, এসব সিনেমা জনপ্রিয়তা পাওয়া ইন্ডাস্ট্রি এবং দেশের জন্য ক্ষতিকর।
এক সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, “এখন আপনি যত ‘অতি দেশপ্রেমী’ হবেন, তত জনপ্রিয়তা পাবেন; এটাই দেশে চলছে। এখন শুধু দেশকে ভালোবাসলেই হবে না, বরং সেটা ঢাকঢোল পিটিয়ে বলে বেড়াতে হবে। কিন্তু এসব লোক বুঝতে পারছে না, তারা যেটা করছে, সেটা ক্ষতিকর। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, ‘গাদার ২’ সিনেমাগুলো আমি দেখিনি, কিন্তু জানি এগুলোর বিষয়বস্তু কী। এটা খুব ক্ষতিকর যে, ‘কাশ্মীর ফাইলস’র মতো সিনেমা জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অথচ সুধির মিশ্র, অনুভব সিনহা, হানসাল মেহতার মতো নির্মাতারা সময়ের সত্যটা তুলে ধরছেন, কিন্তু কেউ তা দেখছে না!”
নাসিরুদ্দিন শাহ মনে করেন, সিনেমা হলো সেই মাধ্যম, যেটা সময়কে ধরে রাখে এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়। তার ভাষ্য, “তারা (নির্মাতা-প্রযোজক) এই ভুল প্রচারণার জন্য দায়ী থাকবেন। ১০০ বছর পর মানুষ যখন ‘ভীড়’ (অনুভব সিনহা নির্মিত ছবি) দেখবে, তারা ‘গাদার ২’ও দেখবে; কোন ছবিতে আমাদের সময়ের সত্যটা আছে, সেটা দেখবে। কারণ সিনেমাই একমাত্র মাধ্যম, যেটা কালের সীমানা পেরিয়ে টিকে থাকে। এটা ভয়ানক ব্যাপার যে, নির্মাতারা এখন সিনেমার মধ্যে যতসব ভুল জিনিস ঢুকিয়ে দিচ্ছেন এবং অন্য জাতি-দেশকে কোনও কারণ ছাড়াই ছোট করে দেখাচ্ছেন। এটা ভয়ংকর ট্রেন্ড।”
প্রসঙ্গত, নাসিরুদ্দিন শাহকে আগামীতে দেখা যাবে ‘চার্লি চোপড়া’ নামের একটি সিরিজে। এতে তার স্ত্রী রত্না পাঠক শাহ এবং দুই পুত্র ভিভান ও ইমাদও অভিনয় করেছেন। সিরিজটি মুক্তি পাবে সনি লিভ-এ।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস