সহিংসতায় বিধ্বস্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে বিদ্রোহীদের হামলায় কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৭ জন সেনাসদস্য। বাকিরা স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধা।
আফ্রিকার এই দেশটির উত্তরাঞ্চলে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষের সময় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের উত্তরে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সাথে ভারী সংঘর্ষের সময় বুরকিনা ফাসোর নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৫৩ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে। সেনাবাহিনী মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত সোমবার ইয়াতেঙ্গা প্রদেশের কৌমব্রি এলাকায় ‘আক্রমণের’ পর ১৭ জন সৈন্য এবং সেনাবাহিনীকে সহায়তাকারী ৩৬ জন স্বেচ্ছাসেবক নিহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে যোদ্ধাদের তাড়িয়ে দেওয়া বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য ওই শহরে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছে, ‘চরম কাপুরুষোচিত এই কাজের জবাব দেওয়া হবে। পলাতক অবশিষ্ট সন্ত্রাসীদের হত্যার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
এছাড়া সেনাবাহিনীর হামলায় কয়েক ডজন যোদ্ধা নিহত এবং তাদের যুদ্ধ সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। ওই এলাকায় অভিযান এখনও চলছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলা মোকাবিলায় রীতিমতো সংগ্রাম করছে বুরকিনা ফাসো। সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা এবং আইএস’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া গত এক দশকে আফ্রিকার এই দেশটিতে সহিংসতা অনেক বেড়েছে এবং জোরালো হয়েছে।
আর এতে প্রতি বছর হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং কয়েক হাজার মানুষ রয়েছেন অনাহারের দ্বারপ্রান্তে। সংঘাত বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের প্রায় অর্ধেকই সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বুরকিনা ফাসোতে সহিংসতা বেড়েছে। মূলত দেশটির কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা কার্যক্রম বাড়ানো সত্ত্বেও সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ফিরে পেতে কার্যত সংগ্রাম করছে তারা।
আল জাজিরা বলছে, প্রায় ২৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দেশটিতে গত বছর দুটি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে। আর গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে দ্বিতীয় অভ্যুত্থানে ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওর ক্ষমতা দখলের পর থেকে সোমবারের এই হত্যাকাণ্ডটিকে সবচেয়ে বড় হামলাগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে।