জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করে মুন্নাসহ দল ও অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতাকর্মীর মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও উদ্যোগ গ্রহণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ সকল মানবাধিকার সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী বলেন, মোনায়েম মুন্না সব মামলায় জামিন পাওয়ার পরেও এবং এজাহারে নাম না থাকলে আর কোনো নতুন মামলা দায়ের না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ইতঃপূর্বে নানাভাবে তাকে আটকিয়ে রাখার যে বেআইনি কার্যক্রম দেশব্যাপী প্রত্যক্ষ করা হয়েছে তা নজিরবিহীন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাক ডেট দিয়ে পেন্ডিং মামলায় মুন্নাকে আটকিয়ে রাখার পর আবারও উচ্চ আদালতে রিট করলে তাকে মুক্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জেল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে নিরব।
তিনি বলেন, আব্দুল মোনায়েম মুন্না এ মুহূর্তে সকল মামলা থেকে জামিনপ্রাপ্ত। অথচ তাকে কারাগার থেকে বের হতে দিচ্ছে না জেল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে- চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে মুক্তির নির্দেশনা না পেলে মোনায়েম মুন্নাকে ছাড়বে না। এই ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
বিএনপি’র এই নেতা বলেন, এ দেশে মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের স্বাধীনতা, কন্ঠের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ নাগরিক স্বাধীনতা এখন শেখ হাসিনা সরকারের আঁচলবন্দি। পুলিশ ও আদালত এ ক্ষেত্রে আইনের শাসনের বদলে শেখ হাসিনার চোখ রাঙানিকেই আমলে নিচ্ছে। শেখ হাসিনার চেতনার স্তরে বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করা ছাড়া আর কিছু নেই। সুবিচারকে তিনি করেছেন দেশছাড়া।
রিজভী অবিলম্বে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাইফুল আলম নীরব, রফিকুল আলম মজনু, শেখ রবিউল আলম রবি, তানভীর আহমেদ রবিন, এস এম জাহাঙ্গীর, আলী আকবর চুন্নু, গোলাম মাওলা শাহীন, ইউসুফ বিন জলিল কালু, মুসাব্বির আহমেদসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
গত ০৮ মার্চ আবদুল মোনায়েম মুন্নাকে ঢাকা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরবর্তীতে শাহজাহানপুর থানার মামলায় (মামলা নং ০৬(১২)২২) তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
যুবদল নেতারা জানান, এরপর থেকে এক মামলায় জামিন হলে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মোনায়েম মুন্নাকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এক পর্যায়ে সকল মামলায় জামিন হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেয়নি জেল কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ রামপুরা থানার নাশকতার একটি মামলায় মুন্নাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালত।