DON'T MISS
Home » UK NEWS » বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি

প্রথম আলো ও যুগান্তরের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। অবিলম্বে প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে তারা। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনকে ঘিরে রাতের আঁধারে সাদাপোশাকধারী পুলিশ প্রতিবেদককে ধরে নিয়ে যায়। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে পত্রিকার সম্পাদক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। একই আইনে যুগান্তরের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও চট্টগ্রামে মামলা দেওয়া হয়েছে। এই আইন যখন প্রবর্তন করা হয় এবং পরেও সরকারের মুখপাত্ররা বারবার বলেছেন যে এটি সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হবে না। কিন্তু এটি সবচেয়ে বেশি যে পেশার মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সাংবাদিক অন্যতম। সাধারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের ওপরও এটি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একজনের মন্তব্য ও আরেকজনের ছবি দিয়ে প্রথম আলো যে ফটোকার্ড ছেপেছিল, সাধারণ পাঠকের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে বিবেচনায় কিছুক্ষণের মধ্যেই ফটোকার্ড সরিয়ে নেয় এবং সংশোধিত রিপোর্ট ছাপে। বিক্ষুব্ধ পক্ষ প্রেস কাউন্সিলে না গিয়ে যে পদ্ধতি অবলম্বন করেছে, তা চরম অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী মানসিকতারেই বহিঃপ্রকাশ। এরপর এডিটর গিল্ডস, সম্পাদক ফোরাম ইত্যাদি সাংবাদিকদের সংগঠন সরকারের নিবর্তনকে চিহ্নিত না করে, পত্রিকাকেই দায়ী করে। একটি টিভি চ্যানেল অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নামে পুরো ঘটনাকে বিকৃত করে নতুনভাবে রিপোর্ট করে, যাকে সাক্ষী মানা হয় মামলার এজাহারকে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের এ রকম পদক্ষেপ বিরল এক ঘটনা, যার নিন্দা জানাই।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই দলে যোগ দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সমিতির নেতারা তাঁদের বিবৃতিতে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে বেআইনিভাবে একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে একটা শব্দও উচ্চারণ না করে সরকারের এই কাণ্ডের পক্ষে নির্জলা তোষামোদী বক্তব্য হাজির করেছে, যা আমাদের চরমভাবে লজ্জিত এবং মর্মাহত করেছে! শিক্ষকদের অধিকার আদায় ও নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত হলেও শিক্ষকদের দাবিদাওয়ায় তাদের মনোযোগ নেই। কোনো শিক্ষক কোনো হুমকি বা নিপীড়নের শিকার হলেও এই সংগঠনের নেতাদের কোনো সক্রিয়তা দেখা যায় না।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্যাতন একটা প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা নিয়েছে। কিন্তু সে বিষয়েও শিক্ষক সমিতির কোনো বক্তব্য নেই। শিক্ষক সমিতি কিছু শিক্ষকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গঠনের একটা মাধ্যমে পর্যবসিত হয়েছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি শর্তহীন আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যমে তাঁরা নিজের রাজনৈতিক এবং পেশাগত উচ্চাশা পূরণের পথ সুগম করতে চেষ্টা করেন। বিনিময়ে তাঁরা সমাজের কাছে পুরো শিক্ষকতা পেশার মানমর্যাদাকে ধুলায় লুটিয়ে দিতে কার্পণ্য করছেন না।

নওগাঁয় র‍্যাবের হেফাজতে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের (৪৫) মৃত্যুর জন্য দায়ী র‌্যাব সদস্যদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ জন শিক্ষক এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*