মিসরীয় ধনকুবের মোহাম্মদ আল ফায়েদ মারা গেছেন। একসময় তিনি লন্ডনের অভিজাত ডিপার্টমেন্ট স্টোর হ্যারডস কিনে নিয়েছিলেন। তাঁর ছেলে দোদি আল ফায়েদ প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন। ডায়ানা ও দোদির ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীর এক দিন আগেই তিনি মারা যান।
আল ফায়েদের বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। ছেলে দোদি ও ডায়ানার মৃত্যুর পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। প্রিন্স ফিলিপের নির্দেশে তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল ফায়েদের।
১৯৯৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলে দোদি ও প্রিন্সেস ডায়ানা নিহত হওয়ার পর ১০ বছর ধরে আল ফায়েদ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে এটি আসলে হত্যাকাণ্ড। আল ফায়েদের অভিযোগ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনার পর তাঁদের হত্যা করা হয়। সে সময় আল ফায়েদকে স্বেচ্ছাচারী, প্রতিহিংসাপরায়ণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
কোনো ধরনের তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আল ফায়েদ সে সময় অভিযোগ করেন, দোদির সন্তানের মা হতে যাচ্ছিলেন ডায়ানা। প্রিন্স ফিলিপ ব্রিটেনের নিরাপত্তা বাহিনীকে ডায়ানাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তোলেন আল ফায়েদ। কারণ, প্রিন্স ফিলিপ চাননি ডায়ানা একজন মুসলিমকে বিয়ে করেন এবং তাঁর সন্তানের মা হন।
দোদি ও ডায়ানার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীর এক দিন আগে আল ফায়েদ গত বুধবার মারা গেছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
আল ফায়েদকে নিয়ে অনেক সমালোচনা থাকলেও ব্রিটেনের সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোর কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ সালে হ্যারডস দখল করার পরে ব্রিটেনে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ১৯৯৪ সালে তিনি পার্লামেন্টে তাঁর পক্ষে প্রশ্ন করার জন্য রাজনীতিবিদদের অর্থ দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
আল ফায়েদ তাঁর কথা ও কাজের জন্য আলোচিত ছিলেন। একবার তিনি বলেছিলেন, তিনি হ্যারডসের ছাদে কাচের পিরামিডে সোনার কফিনে মমি হতে চান। হ্যারডস স্টোরে তিনি ক্রেতাদের জন্যও পোশাকবিধি চালু করেন। হ্যারডসে তিনি প্রিন্সেস ডায়ানা আর দোদি-আল ফায়েদের ব্রোঞ্জের মূর্তি বসিয়েছিলেন।
২০১০ সালে আল ফায়েদ কাতারের সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের কাছে হ্যারডস বিক্রি করেন।