DON'T MISS
Home » Bangladesh » Bangladeshi Politics » ঢাকায় বিএনপির ৭টি অবস্থান কর্মসূচি হতে পারেনি, ৩৪ জন গ্রেপ্তার

ঢাকায় বিএনপির ৭টি অবস্থান কর্মসূচি হতে পারেনি, ৩৪ জন গ্রেপ্তার

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) আহ্বায়ক আবদুস সালাম 

সারা দেশে মহানগরগুলোর সব থানা, উপজেলার বেশির ভাগ জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দলের হামলা, পুলিশের বাধায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় এ কর্মসূচি হতে পারেনি।

কোথাও কোথাও দুই ঘণ্টার কর্মসূচি এক ঘণ্টা বা এরও আগে শেষ করতে হয়েছে। এদিকে ঢাকার কর্মসূচি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৩৪ জনকে।

বিদ্যুৎ, গ্যাস ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, ক্ষমতাসীন সরকারের ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতি’র প্রতিবাদ; সরকারের পদত্যাগসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে দেশের সব মহানগরের থানা-উপজেলায় দুই ঘণ্টার (বেলা দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত) এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ দেয় বিএনপি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হামলা চালানোর অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের ঘৃণা এতটাই তীব্র হয়েছে যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের সুযোগ পেলে জনগণ তার উপযুক্ত জবাব দেবে। সে জন্য জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে জোর করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার। আর এ জন্যই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নানা পন্থায় দমন করতে দেশব্যাপী হামলা-মামলা, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, আহত করা শুরু হয়েছে।

রাজধানীর বাড্ডা হাইস্কুল মাঠে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান 

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির সূত্র বলেছে, ক্ষমতাসীনদের হামলা ও পুলিশের বাধায় রাজধানীর সাতটি থানায় অবস্থান কর্মসূচি হতে পারেনি। এগুলো হলো উত্তরের গুলশান, উত্তরা পশ্চিম, ক্যান্টনমেন্ট ও হাতিরঝিল থানায় এবং দক্ষিণের বংশাল, কোতোয়ালি ও মতিঝিল থানার কর্মসূচি হয়নি।

রমনা থানার অবস্থান কর্মসূচি ছিল মৌচাক এলাকায়। সেখান থেকে পুলিশ রমনা থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আবদুল মোতালেবসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া বাটা সিগন্যাল মোড়ে নিউমার্কেট থানার কর্মসূচি থেকে বাবু মিয়াসহ দুজন, আইডিয়াল স্কুলের সামনে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা থানার কর্মসূচি থেকে কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়া নামে একজনসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওয়ারী থানার কর্মসূচি ছিল বেলা দুইটায়, ধোলাইখালে। কর্মসূচির প্রধান অতিথি মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক হোসেন বেলা দেড়টায় তাঁর গোপীবাগের বাসা থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বের হতে গেলে পুলিশ বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। ফলে ওয়ারীর কর্মসূচি হয়নি। ধোলাইখাল এলাকায় আরেকটি কর্মসূচি ছিল সূত্রাপুর থানা বিএনপির। সেখানেও পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা চালান বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন কর্মসূচির প্রধান অতিথি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ফাহিমা নাসরিন।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবদুস সালামের নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচি করে পল্টন থানা।

মহানগর উত্তর বিএনপি বলেছে, অবস্থান কর্মসূচি থেকে ভাটারা থানা এলাকায় তিনজন, মিরপুর থানায় তিনজন, রূপনগর থানায় পাঁচজন ও শাহ আলী থানায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাড্ডা হাইস্কুল মাঠে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনতেই আমরা রাজপথে নেমেছি। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। নিশিরাতের আওয়ামী সরকারের পতন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাব না। এটাই আমাদের আজকের অঙ্গীকার।’

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা বিএনপি বেলা দুইটায় কর্মসূচি পালন করতে অবস্থান নেয় কারওয়ান বাজারের প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবনের সামনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে লাঠিসোঁটা নিয়ে আশপাশে জড়ো হন যুবলীগের ২৫-৩০ জন কর্মী-সমর্থক। এ সময় পুলিশ সংঘাত এড়াতে কর্মসূচির সময় সংক্ষিপ্ত করতে বললে পৌনে এক ঘণ্টা আগেই কর্মসূচি শেষ করা হয়।

এই কর্মসূচির প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তাবিথ আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মসূচি চলাকালে যুবলীগের লোকজন ঘেরাও করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ান। পুলিশ এসে বলল, তাঁরা গন্ডগোল করতে চান। কর্মসূচি সংক্ষেপ করলে সুবিধা হয়। তাই দেড় ঘণ্টায় শেষ করে দিয়েছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*