- চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
- গত ১২ আগস্ট রাজধানীর বংশাল ও ভাটারা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মাত্র কয়েক সেকেন্ডে অনলাইনে ফোন বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া ব্যক্তিকে বোকা বানান তাঁরা। এমন একটি চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার বিভাগ।
গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার বিভাগ সূত্র জানায়, অনলাইনে দামি মুঠোফোন বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখলেই বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। দরদাম করে মূল্য নির্ধারণের পর তিনজন মিলে ক্রেতা সেজে মুঠোফোন কিনতে যান। দেখেশুনে মুঠোফোন কেনার পর টাকাও পরিশোধ করা হয়।
পকেট থেকে টাকার বান্ডিল বের করে রবার খুলে মুঠোফোনের মালিককে টাকা গুনতে বলেন। গণনা শেষ হলে টাকায় রবার লাগিয়ে দেওয়ার কথা বলে আবার ফেরত নেওয়া হয়। টাকা ফেরত নেওয়ার পর নানা কথা জিজ্ঞেস করে মুঠোফোনের মালিককে ব্যস্ত রাখেন দুজন।
এমন একটি চক্রের বিরুদ্ধে ১০ আগস্ট ঢাকার রমনা থানায় মামলা করেন এক ভুক্তভোগী।
এই সুযোগে আসল এক হাজার টাকার বান্ডিল পরিবর্তন করে আরেকটি টাকার বান্ডিল দেওয়া হয়। সেই বান্ডিলের ওপর ও নিচে এক হাজার টাকার নোট থাকলেও ভেতরে পুরোনো ২০ টাকার নোট ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই অদলবদলের কাজটি হয় মাত্র কয়েক সেকেন্ডে।
এভাবে ক্রেতা সেজে মুঠোফোন মালিকদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসা একটি চক্রের বিরুদ্ধে গত ১০ আগস্ট ঢাকার রমনা থানায় মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। সেই মামলা তদন্তে নেমে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গত ১২ আগস্ট রাজধানীর বংশাল ও ভাটারা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি বলছে, ফেসবুক পেজ ও অনলাইনে মুঠোফোন কেনাবেচার বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখে ক্রেতা সেজে মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন চক্রের সদস্যরা। তাঁরা সাধারণত দামি মুঠোফোন বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া মালিকদের ‘টার্গেট’ করেন। তিন বছরের বেশি সময় ধরে ক্রেতা সেজে অনেকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছেন তাঁরা।
সেখানে আইফোনটির দাম ৮১ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়। সেই বিজ্ঞাপন দেখে ফোনটি কেনার কথা বলে একজন কল করেন। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় ফোনটির দাম ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
রমনা থানার পুলিশ যে মামলার সূত্র ধরে এই চক্রের সন্ধান পেয়েছে, সেই মামলাটির বাদী ছিলেন খলিফা আশরাফ উদ্দিন। মামলায় আশরাফ অভিযোগ করেন, ২০ জুলাই তাঁর মুঠোফোন নম্বর দিয়ে বিক্রয় ডটকমে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেখানে আইফোন–১৩ বিক্রির একটি বিজ্ঞাপন দেন।
সেখানে আইফোনটির দাম ৮১ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়। সেই বিজ্ঞাপন দেখে ফোনটি কেনার কথা বলে একজন কল করেন। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় ফোনটির দাম ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে ২৪ জুলাই রমনার মৌচাক এলাকার একটি মার্কেটের সামনে ওই তিন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁরা মুঠোফোনটি হাতে নিয়ে দেখেন। এরপর কিনবেন বলে রবার দিয়ে আটকানো এক হাজার টাকার একটি বান্ডিল তাঁকে গণনা করতে দেন।
টাকা গণনা শেষ হলে এক–দুই হাজার টাকা কম নেওয়া নিয়ে কথা বলে সময়ক্ষেপণ করেন। ‘টাকা কম নেব না’ বললে তিনজনের একজন রবার লাগিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকাগুলো নেন। আবার টাকা দিলে তিনি না দেখেই তা পকেটে রাখেন। মুঠোফোন বিক্রি শেষে একটি খাবারের দোকানে যান। খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে টাকার ব্যান্ডিল বের করে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।