বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগে কর্মরত সদস্য মুজিবুল আলম স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এই বিবৃতিতি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালে এই দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিনটি মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন, কাশ্মীর, মিয়ানমার এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। বর্বর ইসরাইলি বাহিনী মূলত মুসলিম জাতিগোষ্ঠী চিরতরে নির্মূল করার লক্ষ্যে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। খুনি ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলা থেকে নারী-শিশু-বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, বুদ্ধিজীবী কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। যুদ্ধের সকল নিয়ম-নীতি ভূলুণ্ঠিত করে মাত্র ২ মাসে মানবতার দুশমন ইসরাইলি বাহিনী ঠান্ডা মাথায় ১৮ হাজারের অধিক বেসামরিক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেখানকার ৭০ ভাগ বসতভিটা মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজাবাসীর জন্য চিকিৎসা সামগ্রী, ঔষধ, খাদ্য, পানি কোনো কিছুই ঢুকতে দিচ্ছে না মানবতার দুশমন বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। এর নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আমরা অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং ফিলিস্তিনের স্থায়ী সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের সকল মানবতাবাদী রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, দেশে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্মম শিকার জামায়াত নেতৃবৃন্দকে দীর্ঘ দিন যাবত কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। সরকার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে প্রায় ১৩ বছর যাবত কারাগারে আটক রেখেছে।
তিনি বলেন, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির জনাব সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীসহ বিরোধী দলীয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে বারবার ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতের দৃষ্টিতে আনার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। জামায়াত নেতৃবৃন্দের সাথে সরকারের এই আচরণ চরম অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার পরিপন্থি।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের এই দিনে আটক সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ভোটাধিকারসহ মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে আপামর জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।