DON'T MISS
Home » UK NEWS » Bangladesh politics » গাজায় প্রবেশের আগে ইসরাইলের যত হিসাব-নিকাশ

গাজায় প্রবেশের আগে ইসরাইলের যত হিসাব-নিকাশ

8033_3.jpg

বেশ কয়েকদিন ধরে ইসরাইল আভাস দিয়ে যাচ্ছে যে তাদের বিশাল সৈন্য বাহিনী হামাসকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করতে গাজায় অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত।

ইসরাইলের ডিফেন্স ফোর্স-আইডিএফের তিন লাখ সংরক্ষিত সেনা সদস্যকে ডাকা হয়েছে এরই মধ্যে। গাজা সীমান্তের অন্যপাশে ইসরাইল অংশের ছোট ছোট শহর, মাঠ আর শস্যক্ষেত সব এখন ট্যাংক, গোলা বারুদ এবং ভারী অস্ত্রে সুসজ্জিত হাজারো সেনা সদস্য দিয়ে ভর্তি।

ইসরাইলি বিমান ও নৌ বাহিনী যত হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সন্দেহজনক আস্তানা ও অস্ত্রাগার আছে – সেসব লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক মারা যাচ্ছেন ও আহত হচ্ছেন আর অল্প সংখ্যক হামাস নেতা মারা পড়ছেন।

গাজার একটি হাসপাতালে বিস্ফোরণের ফলে যে বিপুল মানুষ হতাহত হয়েছে, তা এই অঞ্চলের উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে, যদিও এ হামলার দায় অস্বীকার করে দু’পক্ষই একে অন্যকে অভিযুক্ত করছে।

কিন্তু কেন এখনো গাজায় অভিযানের ঘোষণা দিয়েও তা শুরু করছে না ইসরাইল?

এর পেছনে আসলে অনেকগুলো কারণ আছে।

বাইডেন ফ্যাক্টর
চলতি সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তাড়াহুড়ো করে ইসরাইল সফর জানান দেয় পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে হোয়াইট হাউজ কতেটা চিন্তায়। ওয়াশিংটনের দুশ্চিন্তার জায়গা দু’টি: মানবিক বিপর্যয় ক্রমেই বেড়ে যাওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়া।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে পরিষ্কার করে জানিয়েছেন যে গাজা থেকে ২০০৫ সালে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল ইসরাইল, সেটা আবারো দখলে নেয়ার বিরুদ্ধে তিনি। তার ভাষায়, এটা হবে ‘একটা বড় ভুল’।

সরকারিভাবে তার এই ইসরাইল সফরের প্রধান কারণ মধ্যপ্রাচ্যে অ্যামেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রকে কৌশলগত সহায়তা প্রদান এবং একইসাথে গাজা নিয়ে ইসরাইলের পরিকল্পনা শোনা।

তবে অপ্রকাশিত কারণ হলো বাইডেন এই সফরে বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর চরমপন্থী সরকারকে একটু ছাড় দেয়ার ব্যাপারে কথা বলবেন। যুক্তরাষ্ট্র জানতে চায়, ইসরাইল যদি গাজায় প্রবেশ করে, তবে তারা সেখান থেকে কখন ও কিভাবে বের হওয়ার পরিকল্পনা করছে?

ইসরাইল যদি গাজায় পুরোমাত্রার সামরিক অভিযান চালাতে চায়, তাহলে সেসময় তেল আবিবে এয়ারফোর্স ওয়ান হাজির থাকাটা অ্যামেরিকা ও ইসরাইল কারো জন্যই ভালো দেখায় না।

আল আহলি হাসপাতালে ভয়াবহ বিস্ফোরণের আড়ালে চাপা পড়ে যাওয়া এই সফরে জো বাইডেন প্রকাশ্যেই ইসরাইলের যে বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। ইসরাইল দাবি করেছে, একটা ফিলিস্তিনি রকেট ভুল করে এই হাসপাতালে পড়লে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে হাসপাতালটি ইসরাইলি বিমান হামলার শিকার।

ওই বিস্ফোরণে মৃত্যুর সংখ্যা যা কয়েক শ’ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিবিসি স্বাধীনভাবে এ বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে।

ইরান ফ্যাক্টর
গত কয়েক দিনে ইরান স্পষ্ট হুমকি দিয়ে বলেছে গাজায় ইসরাইল যে ঘৃণ্য হামলা চালাচ্ছে তার যথাযথ উত্তর দেয়া হবে। এখন এটার মানে কী?

ইরান মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীকে তহবিল, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণও করে থাকে।

এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর লেবাননের হেজবুল্লাহ, যাদের অবস্থান একেবারে ইসরাইলের উত্তর সীমান্ত ঘেঁষে।

হেজবুল্লাহ ২০০৬ সালে ইসরাইলের সাথে এক রক্তক্ষয়ী ও বিধ্বংসী যুদ্ধে জড়ায়, যখন ইসরাইলের আধুনিক সব অস্ত্র প্রতিপক্ষের পরিকল্পিত হামলা এবং লুকানো মাইনের কাছে হার মানে।

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?client=ca-pub-1414060017337636&output=html&h=250&adk=672839124&adf=2662333036&pi=t.aa~a.351912254~i.56~rp.1&w=310&fwrn=7&fwrnh=100&lmt=1698015322&num_ads=1&rafmt=1&armr=3&sem=mc&pwprc=8974748454&ad_type=text_image&format=310×250&url=https%3A%2F%2Flb24.tv%2Fdetail.php%3Flb%3D8033&fwr=0&pra=3&rh=259&rw=310&rpe=1&resp_fmts=3&sfro=1&wgl=1&fa=27&dt=1698015322585&bpp=2&bdt=6084&idt=2&shv=r20231017&mjsv=m202310170101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3D4ca1d25491e3040f-2237230890e1000b%3AT%3D1686832687%3ART%3D1698015317%3AS%3DALNI_MZvl1Z2W37q–QOkDkQaueBDlf8ag&gpic=UID%3D00000c4f5236aa09%3AT%3D1686832687%3ART%3D1698015317%3AS%3DALNI_MbDQFC8hs9IY8xFAVZqy6wXooV8MA&prev_fmts=0x0%2C428x90%2C428x356%2C428x356%2C428x356%2C428x356%2C310x250&nras=3&correlator=3486368293755&frm=20&pv=1&ga_vid=531763568.1698015317&ga_sid=1698015317&ga_hid=322207335&ga_fc=0&u_tz=60&u_his=1&u_h=926&u_w=428&u_ah=926&u_aw=428&u_cd=32&u_sd=3&adx=59&ady=3309&biw=428&bih=745&scr_x=0&scr_y=370&eid=44759875%2C44759926%2C31078831%2C44798934%2C44805113%2C44805533%2C44805680%2C44805920%2C44805931%2C31078301&oid=2&pvsid=1684603687622984&tmod=942148393&nvt=1&fc=1408&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C428%2C0%2C428%2C926%2C428%2C862&vis=1&rsz=%7C%7Cs%7C&abl=NS&fu=128&bc=31&ifi=8&uci=a!8&btvi=6&fsb=1&xpc=QS7k5JlXrI&p=https%3A//lb24.tv&dtd=8

তারপর থেকে ইরানের সহায়তায় হেজবুল্লাহ পুনরায় নতুন করে নিজেদের সংগঠিত করেছে এবং ধারণা করা হয় তাদের কাছে এখন কমপক্ষে দেড় লাখ রকেট ও মিসাইল আছে, যার অনেকগুলোই দূরপাল্লার এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।

ফলে একটা হুমকি তো আছেই যে যদি ইসরাইল গাজায় অভিযান শুরু করে তাহলে হেজবুল্লাহ হয়তো ইসরাইলের উত্তর সীমান্ত দিয়ে পাল্টা হামলা শুরু করবে, যা তাদের দুই দিকে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

তবে এর কোনোই নিশ্চয়তা নেই যে হেজবুল্লাহ বাহিনী এসময় এরকম একটা যুদ্ধে জড়াবে। বিশেষ করে যখন ভূমধ্যসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি রণতরী প্রস্তুত হয়ে আছে যেকোনো সময় ইসরাইলকে সহায়তা করার জন্য।

এটি বরং ইসরাইলকে ভরসা দিচ্ছে যে হেজবুল্লাহর দিক থেকে যদি কোনো আঘাত আসে তাহলে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে।

তবে এক্ষেত্রে স্মরণ করা যেতে পারে যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের সময় হেজবুল্লাহর একটি অত্যাধুনিক অ্যান্টি-শিপ মিসাইল ইসরাইলের একটি যুদ্ধজাহাজকে আঘাত করতে পেরেছিল।

মানবিক ফ্যাক্টর
ইসরাইলি সরকার গাজা থেকে হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে গিয়ে মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়টি যেন বাকি বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।

টানা ইসরাইলি বিমান হামলায় যখন ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু সংখ্যা বাড়তে শুরু করে, তখন সারাবিশ্ব ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর ইসরাইলিদের দিকে যে সমবেদনা দেখিয়েছে, সেটা আস্তে আস্তে বিমান হামলা বন্ধ ও নিরাপরাধ গাজাবাসীকে রক্ষার দিকে গিয়েছে।

যদি কখনো ইসরাইলি বাহিনী স্থল অভিযান শুরু করে তাহলে হতাহতের এ সংখ্যা আরো বাড়তেই থাকবে।

ইসরাইলি সেনারাও মারা পড়বে, গুপ্ত হামলা, স্নাইপার এবং বুবি ট্র্যাপে আর বেশিরভাগ যুদ্ধই হয়তো হবে মাটির নিচে ছড়িয়ে থাকা মাইলের পর মাইল টানেলে।

কিন্তু সেক্ষেত্রেও শেষ পর্যন্ত এর মূল্য হয়তো দিতে হবে সাধারণ মানুষকেই।

ইসরাইলিলের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত, হামাসের এত বড় মারাত্মক হামলা আগে থেকে আঁচ করতে না পারায় কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে।

গাজার ভেতরে তাদের তথ্যদাতা এবং স্পাইয়ের একটা নেটওয়ার্ক থাকার কথা যারা হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের নেতাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখবে।

কিন্তু এরপরও সেই ভয়ঙ্কর শনিবারের সকালে যা ঘটেছে তা ১৯৭৩ সালের ইয়ম কিপুর যুদ্ধের পর দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা ব্যর্থতা বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা সেটি কাটিয়ে উঠতে গত ১০ দিন ধরে অবিরাম কাজ করছে। হামাসের হাতে আটক বন্দীদের নাম শনাক্ত করতে এবং তাদের কোথায় রাখা হয়েছে সেই অবস্থান খুঁজে বের করার জন্য তারা কাজ করছে।

একইসাথে হামাস নেতারা কোথায় লুকিয়ে আছে সেটার তথ্য দিয়েও তারা সহায়তা করছে আইডিএফকে।

ফলে এই সম্ভাবনাও আছে যে তারা তথ্য সংগ্রহের জন্য আরেকটু সময় চেয়েছে যাতে, সামরিক অভিযান শুরু হলে উত্তর গাজার ধ্বংসস্তুপের মধ্যে এলোমেলো ঘুরে বেড়িয়ে হামলার শিকার হওয়ার চেয়ে একেবারে নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে পারে।

ইসরাইলের একের পর এক বিমান হামলার পরও হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠী তাদের কার্যক্রম চলমান রেখেছে এবং তাদের নিশ্চয় ইসরাইলি সৈন্যদের জন্য পরিকল্পিত হামলার নকশা ও ফাঁদ পাতা থাকবে। যা মাটির নিচে টানেলে ইসরাইলিদের জন্য আরো বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে।

ইসরাইলি গোয়েন্দাদের লক্ষ্য হবে তাদের সেসব অবস্থান খুজে বের করে আইডিএফকে সতর্ক করে দেয়া। সূত্র : বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*