মুশফিকুল ফজলের সাথে কুশল বিনিমিয় করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি : সংগৃহীত
রাজনীতি নিয়ে সচেতন জনগণের কাছে পরিচিত মুখ সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। হোয়াইট হাউস, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও জাতিসংঘের প্রেস ব্রিফিংয়ে নানা প্রশ্ন নিয়ে হাজির হন তিনি। তাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও নানা মন্তব্য করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, আলোচিত এ ব্যক্তি আমেরিকানদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরেন।
মুশফিকুল ফজল আনসারী এক সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটন ডিসির বাসিন্দা ও সেখান থেকে প্রকাশিত সাউথ এশিয়া পার্সপেক্টিভ জার্নালের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া তিনি ওয়াশিংটন ন্যাশনাল প্রেসক্লাব এবং হোয়াইট হাউজ প্রেস কোর ও জাতিসংঘ সংবাদদাতা সমিতিরও সদস্য।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে নিউইয়র্কে এসেছিলেন তিনি। শনিবার সেখানের বাঙ্গালীপাড়া জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্তোঁরায় কয়েকজনকে নিয়ে নাস্তা করতে যান মুশফিকুল। এ সময় সেখানে সস্ত্রীক হাজির হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় কেউ তাকে মুশফিকুলের বিষয়টি অবহিত করলে তিনি ওই টেবিলের কাছে এগিয়ে গিয়ে কুশল বিনিময় করেন। চেয়ার টেনে বসে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন তারা। এ সময় স্ত্রী সেলিনা মোমেন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রেস্টুরেন্টে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন গণমাধ্যমকে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক মুশফিকুল তার কয়েক বন্ধুসহ নবান্ন রেস্টুরেন্টে বসে সবেমাত্র নাশতা খেতে শুরু করেছিলেন। ঠিক তখনই সেখানে সস্ত্রীক হাজির হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সোজা মুশফিকুলের টেবিলের সামনে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। কুশল বিনিময় শেষে নিজের আমেরিকান জীবনের নানা অধ্যায়ের গল্প করেন। উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ফোবানা গঠনের ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকার কথা বলেন।
ওই ব্যক্তি জানান, কথাবার্তার এক পর্যায়ে মুশফিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ কবে ক্ষমতা ছাড়ছেন?’ জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘ ক্ষমতা ছাড়বো কেন? নির্বাচন হবে নির্বাচনের মতো। আমেরিকায় কি নির্বাচনের সময় প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা ছাড়ে?’ তখন মুশফিক বলেন, ‘ এই তুলনা করবেন না। দেশের সব প্রথা-প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। এসব কেতাবি কথা বলে কী লাভ? বরং প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে যত তাড়াতাড়ি পারেন ক্ষমতা থেকে সরে পড়েন। অবস্থা কিন্তু ভালো না। বিপদে পড়ে যাবেন। তখন আর কিছুই করার থাকবে না। বরং এখনই বিদায় নিলে দেখা যাবে কিছু করা যায় কি-না। পাল্টা উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ না আমরা এসব নিয়ে চিন্তা করছি না। তবে হ্যাঁ পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ। অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে, কারও সাথে ব্যক্তিগত আলাপ-আলোচনাও করা যায় না। সবাই পেছনে লেগে থাকে। সেদিন আমার এক বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তার বাড়িতে গেলাম। আমার আরেক বন্ধু বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলও সেখানে এসেছিল। সেটা নিয়ে কত কথা!’ এর প্রেক্ষিতে মুশফিকুল বলেন, ‘ আপনার দল আওয়ামী লীগই দেশটাকে এই জায়গায় নিয়ে গেছে।’ পরে মন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে অন্য টেবিলে বসে নাশতার অর্ডার দেন।