DON'T MISS
Home » UK NEWS » Bangladesh politics » বছর শেষে রপ্তানি আয়ে সুখবর নেই

বছর শেষে রপ্তানি আয়ে সুখবর নেই

দেশে প্রস্তুত পণ্য বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে জাহাজে তোলা হচ্ছে। পুরোনো ছবি

দেশে প্রস্তুত পণ্য বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে জাহাজে তোলা হচ্ছে। পুরোনো ছবি

বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরেও কমেছে রপ্তানি আয়। এ সময় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে ১ দশমিক ০৬ শতাংশ। এর পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। 

এ সময় রপ্তানি আয়ের প্রাণভোমরা তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। ওভেনে রপ্তানি কমলেও নিটওয়্যার পোশাকে বেড়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য এবং বাইসাইকেলসহ সকল খাত মিলে ডিসেম্বর মাসে দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে ৫৩০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৫৩৬ কোটি ৫১ লাখ ডলার। অর্থাৎ একক মাস হিসেবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ৬ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ০৬ শতাংশ।

এদিকে, একক মাস হিসেবে রপ্তানি আয় কমার পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হয়নি। ডিসেম্বর মাসে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৬২ কোটি ১০ লাখ ডলার। আর আয় হয়েছে ৫৩০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে দুই হাজার ৭৫৪ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল দুই হাজার ৭৩১ টাকা। সেই হিসাবে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ। তবে এ সময় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কম হয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, ডলার সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া, সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার আশংকাসহ বিভিন্ন ধরনের সংকটের কারণে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী দিনে রপ্তানি আয় আরও কমবে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিতে এই ধরনের নিম্নমুখী প্রবণতার পূর্বাভাস দিয়ে আসছি। প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ববাজারে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা কমে আসছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলো ব্যাংকের সুদের হার বাড়িয়েছে যা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা এবং পণ্যের চাহিদাকে আরও কমিয়ে দিয়েছে। ফলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ এই সংকটে আরও ইন্ধন যোগ করেছে। আমাদের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে, চলতি বছর তৈরি পোশাক রপ্তানি বৈশ্বিকভাবে আরও কিছুটা কমবে এবং আমাদের কিছুটা হলেও এর উত্তাপের মুখোমুখি হতে হবে। এছাড়া, ন্যূনতম মজুরি ইস্যুতে অক্টোবরে শ্রম অসন্তোষের সময় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কারণেও রপ্তানি আয় কমায় প্রভাব ফেলেছে।

খাতওয়ারি রপ্তানি আয়ের মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৩৩৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার। যা রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি হলেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ কম। তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে এক হাজার ৩৪৮ কোটি ডলারের নিট পোশাক ও ৯৯১ কোটি ডলারের ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ সময়ে নিট পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ওভেন পোশাকের প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*